ডঃ খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর বলেছেনঃ “মাযহাব মানে হল মত, পথ, স্কুল, মুমিনের জন্য একটাই দায়িত্ব ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ আল্লাহর ইবাদাত করবে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পদ্ধতিতে, আর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলে গেছেন আমি দুটো জিনিস রেখে গেলাম , আল্লাহর কিতাব এবং আমার সুন্নাহ। মুলত আমাদের দায়িত্ব হল আল্লাহর কোরআন এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নাত মত জীবন যাপন করা। তবে বাস্তবতা এই যে আমরা মুসলমান মুসলিম সমাজে প্রায় শতকরা ৯৯ জনের বেশী আমরা কোরআন বা হাদীস পুরো বুঝি না, অধিকাংশ মানুষ কিছুই বুঝি না, আর অল্প মানুষ যারা অল্প হয়ত একটা-দুটা হাদীস পরেছি বাকি অনেক হাদীস পড়িনি, স্বভাবতই দ্বীনের সম্পর্কে আমাদের ধারনা নেই, এজন্যই আল্লাহ তা’আলা কোরআনেও বলেছেন ‘মোমেন সকলেই কোরআন বুঝে পরবে কিন্তু সবাই ফকীহ হবে না’। সমাজে কিছু মানুষ থাকবেন তারা দ্বীনের গভীর জ্ঞান অর্জন করবেন, ফকীহ হবেন, যাদের কাছ থেকে আমরা খুঁটি-নাটী মাসলা-মাসায়েল জেনেনিব। কাজেই আমরা মাযহাব মানবো দ্বীন পালনের উপকরন হিসেবে, যিনি দ্বীন বুঝেননা, তিনি কোনো না কোনো একজন বড় আলেমকে মানতেই হবে। আসলে আমরা যে মাযহাব মানি এটাও ঠিক না, আমরা কেউই মাযহাব মানি না, আমরা বলি হানাফি মাযহাব কিন্তু আমরা যদি হানাফী মাযহাবই মানতাম তাহলে বাংলাদেশের হানাফীদের মধ্যে এত দল কেন, হানাফীরাই বিভিন্নরকম হলাম কিভাবে, কাজেই আমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ এলাকার একজন আলেমকে মানি। আবার বাংলাদেশের হানাফিদের সাথে তুরস্কের হানাফিদের অনেক পার্থক্য, মিশরের হানাফিদের অনেক পার্থক্য, ইরাকের হানাফিদের অনেক পার্থক্য। মূল বিষয়টা হলো যে, মাযহাব নামে হোক না আলেম নামে হোক একজন বড় আলেমকে আমরা অনুসরন করবো, আমরা কোরআন বুঝিনা এই সেন্সে। বিষয়টা দুটো পর্যায়ের, যে মোমেন মনে করেন আমার দায়িত্ব কোরআন এবং সুন্নাহ মত চলা, আমি কোরআন সুন্নাহ এত বুঝতে পারি না সেই যোগ্যতাও নেই, অমুক আলেম বা অমুক ইমাম বা অমুক মাযহাব কোরআন হাদীস ভাল বুঝেন, আমি তার মতগুলো মানবো এই চেতনায় যে উনি আশা করি ঠিক কথাই বলেছেন তবে যদি কখনোও বুঝতে পারি উনার কথাটা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বিপরীত বা উনার পক্ষে কোন দলীল নেই কোরআন বা হাদীসে, কোরআন-হাদীসে তার বিপরীত আছে, আমি উনার মত বাদদিয়ে কোরআন-হাদিসই মানব, এই চেতনায় যারা মাযহাব মানেন অথবা আলেমদের অনুসরন করেন তাদের এই কর্মটা সুন্নাহ সম্মত সাহাবী, তাবেয়ীদের স্বীকৃত এবং এটা একটা মাসনুন পদ্ধতি। আর যে ব্যক্তি মনে করেন যে, কোরআন-হাদীস বুঝা আমাদের কাজ না ও কোরআন-হাদিসে কি আছে ও চিন্তা করে লাভ নেই, আমার হুজুর অথবা মাওলানা সাহেব অথবা ইমাম সাহেব যেটা বলবেন আমি সেটাই মানবো, যদি কখনোও কোরআন বা হাদীসে (কিছু পাই) আমার মাওলানা সাহেব, হুজুর বা মুরশিদ অথবা ইমামের বিপরীতে, তাহলে আমি কোরআন বা হাদীসের কথাটি ব্যাখ্যা করে রেখে দিব, আমি হুজুরের মত ছাড়বই না এই পর্যায়টা হল শিরক, এটা উলামায়ে একরাম আবু হানিফা রাহমাতুল্লাহি আলায়হিও বলেছেন পরবর্তী উলামারাও বলেছেন, শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলভী হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগা গ্রন্থে এটা বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।”
উপরক্ত কথাগুলো ডঃ খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর এর মুখে শুনতে ও দেখতে এই ভিডিওটি ডাউনলোড করুন, ৫.৪১ এমবি মাত্র, ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন।